নামিবিয়া: দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি বর্তমানে ভয়াবহ খরার কবলে। দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় চাষাবাদ ব্যহত হয়েছে, ফসল নষ্ট হয়েছে এবং খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নামিবিয়ার সরকার একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা দেশের জাতীয় উদ্যান এবং আশপাশের এলাকা থেকে হাতি, জলহস্তী, জেব্রা সহ প্রায় ৭২৩টি বড় প্রাণীকে মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। এই প্রাণীদের মাংস দেশের ক্ষুধার্ত মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হবে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। মন্ত্রকের তরফে ৩০টি জলহস্তী, ৬০টি মহিষ, ৫০টি ইমপালা (হরিণ জাতীয় প্রাণী), ১০০টি নীল ওয়াইল্ডারবিস্ট, ৩০০টি জ়েব্রা, ৮৩টি হাতি এবং ১০০টি ইল্যান্ড (হরিণ জাতীয় প্রাণী)— মোট ৭২৩টি প্রাণীকে মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নামিবিয়ার পরিবেশ, বন ও পর্যটন মন্ত্রকের তরফ থেকে বলা হয়েছে, দেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য সঙ্কট মেটাতেই সরকার বাধ্য হয়ে এই পদক্ষেপ করছে। খরা ও এর ফলে সৃষ্ট খাদ্য সংকটের কারণে দেশের প্রায় অর্ধেক জনগণ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রাষ্ট্রপুঞ্জও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। অনেকেই সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ন্যায়সঙ্গত মনে করছেন না। তাদের মতে, প্রাণীদের জীবন নিয়ে এইভাবে খেলা করা উচিত নয়। আবার অনেকেই বলছেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নামিবিয়ায় এই ভয়াবহ খরার মূল কারণ হল এল নিনো। এল নিনো একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যার ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে। এল নিনোর কারণে নামিবিয়ায় বৃষ্টি কম হয়েছে এবং খরা দেখা দিয়েছে।
নামিবিয়া নয়, আফ্রিকার অন্যান্য দেশও এই মুহূর্তে খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। জিম্বাবোয়ে, মোজাম্বিক সহ আরও কয়েকটি দেশে খরা ও খাদ্য সংকটের কারণে মানুষের দুর্দশা চরমে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে এই ধরনের খরা ও খাদ্য সংকট আরও বেশি দেখা যেতে পারে। তাই এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।