About GDP :: জিডিপি (GDP) কি?
জিডিপি বা গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট (Gross Domestic Product) হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে (সাধারণত এক বছর) একটি দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত সমস্ত চূড়ান্ত পণ্য এবং পরিষেবার মোট আর্থিক মূল্য। সহজভাবে বলতে গেলে, একটি দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের একটি পরিমাপক হলো জিডিপি।
গণনা সূত্র
জিডিপি গণনা করার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, তবে সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতিটি হলো ব্যয় পদ্ধতি:
জিডিপি = C + I + G + (X – M)
যেখানে:
* C = ব্যক্তিগত ভোগ ব্যয় (Consumption)
* I = বিনিয়োগ ব্যয় (Investment)
* G = সরকারি ব্যয় (Government Spending)
* X = রপ্তানি (Exports)
* M = আমদানি (Imports)
(X – M) কে নেট রপ্তানি বলা হয়।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে জিডিপির গুরুত্ব
About GDP :: জাতীয় প্রেক্ষাপট
- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পরিমাপ: জিডিপি দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য এবং প্রবৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
- নীতি নির্ধারণ: সরকার এবং নীতিনির্ধারকরা অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন এবং মূল্যায়ন করতে জিডিপি ডেটা ব্যবহার করে।
- জীবনযাত্রার মান: জিডিপি বৃদ্ধি সাধারণত জীবনযাত্রার মানের উন্নতি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত।
- দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বোঝা যায়।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
- তুলনামূলক বিশ্লেষণ: বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা তুলনা করতে জিডিপি ব্যবহৃত হয়।
- আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ: বিদেশি বিনিয়োগকারীরা একটি দেশের জিডিপি বৃদ্ধি দেখে সেই দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়।
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: জিডিপি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের অবস্থান বোঝা যায়।
বিভিন্ন দেশের জিডিপি (বিলিয়ন মার্কিন ডলারে, আনুমানিক)
জিডিপি (GDP)
| দেশ | জিডিপি (বিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রায় |
| যুক্তরাষ্ট্র | ২৫,০০০+ |
| চীন | ১৭,০০০+ |
| জার্মানি | ৪,০০০+ |
| জাপান | ৪,২০০+ |
| ভারত | ৩,৭০০+ |
| যুক্তরাজ্য | ৩,১০০+ |
| ফ্রান্স | ২,৯০০+ |
| ব্রাজিল | ১,৯০০+ |
| কানাডা | ২,২০০+ |
| বাংলাদেশ | ৪৬০+ |
Also read :: TDS || একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা
জিডিপি কমে গেলে কী ঘটবে?
যখন একটি দেশের জিডিপি কমে যায়, তখন এটি অর্থনৈতিক মন্দা বা সংকোচনের ইঙ্গিত দেয়। এর ফলে বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে:
কর্মসংস্থানের- অভাবজিডিপি কমে গেলে কোম্পানিগুলো উৎপাদন কমিয়ে দেয়, যার ফলে কর্মী ছাঁটাই হয় এবং বেকারত্ব বাড়ে।
ব্যবসায়িক মন্দা- ভোক্তাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যবসাগুলো কম লাভ করে, কিছু ব্যবসা বন্ধও হয়ে যেতে পারে।
সরকারি রাজস্ব হ্রাস- অর্থনৈতিক কার্যকলাপ কমে গেলে সরকারের কর আদায় কমে যায়, যার ফলে সরকারি ব্যয় সীমিত হয়ে যায়।
বিনিয়োগ হ্রাস- অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করেন।
জীবনযাত্রার মান হ্রাস- বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং আয় কমে যাওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রার মান হ্রাস পায়।
উদাহরণ
২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার সময়, অনেক দেশের জিডিপি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল। এর ফলে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক বেকারত্ব, ব্যবসায়িক মন্দা এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল। যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি সেই সময় প্রায় ৩% কমে গিয়েছিল। এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছিল।
জিডিপি কমে যাওয়া একটি দেশের জন্য খুবই খারাপ একটি লক্ষণ।
