কুয়াশার কারণে ক্ষতির আশঙ্কা আলু চাষে, উদ্বেগে বর্ধমানের চাষিরা! দামে কি প্রভাব পড়বে?
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর, রায়না, আউশগ্রাম, কালনা, গলসিতেই মূলত আলুর চাষ বেশি হয়। এই সব এলাকায় আলুর ক্ষেতও তুলনায় অনেকটাই বেশি।
এবারের মাঘে শীতের দেখা নেই। তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। একই সঙ্গে লাগাতার কুয়াশার দাপট। এই জোড়া কোপে দিশাহারা পূর্ব বর্ধমানের আলু চাষিরা। তাঁদের কথায়, ‘‘সময়ের আগেই শীত কমে যাওয়ায় নাবি ধ্বসার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।’’ অর্থাৎ আলুচাষে মড়ক রোগ লাগতে পারে বলে মনে করছেন কৃষকেরা।
কৃষকদের আশঙ্কা, এ বার বৃষ্টির কারণে জমিতে আলুর বীজ বপন দেরিতে হয়েছে। ফলে তুলনায় এমনিতেই ফলন কম হবে। তার উপর ধ্বসা ক্ষতি করছে চাষের। লাগাতার কীটনাশক প্রয়োগেও বাড়ছে ক্ষতির পরিমাণ। আলুচাষি কামরুল মির্জার কথায়, ‘‘শীত কমে যাওয়ায় আলু গাছের সতেজতা কমে যাচ্ছে। আলু গাছ তাড়াতাড়ি মরে গেলে ফলন কম হবে।’’ লাভ কম হওয়ার আশঙ্কাও তাঁদের। কামরুলের দাবি, ‘‘এ বছর চড়া দামে আলুর বীজ কিনতে হয়েছে। আলুচাষে তাই খরচও বেড়েছে। এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করতে এ বছর খরচ হয়েছে ৩০-৩৫ হাজার টাকা। এ বার যদি ফল কম হয় তবে লাভ তো দূরঅস্ত্ চাষের খরচই উঠবে কি না, সন্দেহ।’’
তবে কৃষকদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন জেলা কৃষি আধিকারিক নকুলচন্দ্র মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘আমি মাঠ পরিদর্শন করেছি। এখন পর্যন্ত জমিতে কোথাও রোগ প্রকার আক্রমণ হয়নি। আলুর ফলন খুবই ভাল হবে।’’
দিন কয়েক আগেই আলুর দাম তরতরিয়ে বেড়েছিল। যা ঠেকাতে রাজ্য সরকার একাধিক পদক্ষেপও করে। ভিন্রাজ্যে আলু পাঠানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। যা নিয়ে ক্ষোভও দেখা দেয় আলু ব্যবসায়ীদের মধ্যে। বাজারে বাজারে টাস্ক ফোর্স হানা দেয়। ফলে দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু আবার যদি আলুর ফলন কমে যায়, তবে দামেও হেরফের হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সে ক্ষেত্রে আলুর দাম বৃদ্ধিরও আশঙ্কা থাকছে।