kidney || আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল কিডনি বা বৃক্ক। শরীরের সুস্থতায় কিডনির ভূমিকা অপরিসীম। তাই কিডনির যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
kidney || কিডনি কী?
কিডনি আমাদের শরীরের পিছনের দিকে, মেরুদণ্ডের দুই পাশে অবস্থিত দুটি শিম-বীজের আকারের অঙ্গ। প্রতিটি কিডনি প্রায় ১০-১২ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৬-৭ সেন্টিমিটার চওড়া হয়।
কিডনি কীভাবে কাজ করে?
কিডনির প্রধান কাজ হল রক্ত পরিশোধন করা। কিডনি আমাদের শরীরের রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করে, যা মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এছাড়াও কিডনি শরীরের লবণ, পটাশিয়াম এবং অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিডনি নিম্নলিখিত কাজগুলিও করে:
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে।
- হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
Read More: হাড় মজবুত করতে চান? দুধে ভিজিয়ে খান এই ফল
কিডনির গুরুত্ব:
কিডনি আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। কিডনি যদি সঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে শরীরে বর্জ্য পদার্থ জমা হতে শুরু করে, যা বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। কিডনির সমস্যা হলে উচ্চ রক্তচাপ, অ্যানিমিয়া, হাড়ের দুর্বলতা এবং অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে।
kidney || কিডনির যত্ন কীভাবে নেবেন?
কিডনির যত্ন নেওয়ার জন্য কিছু সহজ উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে:
- পর্যাপ্ত জল পান করুন: প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩ লিটার জল পান করুন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান: ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য খান। লবণ এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন: নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খান।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন: ডায়াবেটিস কিডনির ক্ষতি করতে পারে, তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- ধূমপান ত্যাগ করুন: ধূমপান কিডনির রক্তনালীগুলির ক্ষতি করতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন।
- ওষুধের সঠিক ব্যবহার: ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেন না। বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধ বা অ্যান্টিবায়োটিক।
- নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা: যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির পারিবারিক ইতিহাস আছে, তাদের নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো উচিত।
কিডনি কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কিছু প্রধান কারণ হল:
- ডায়াবেটিস: উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা কিডনির রক্তনালীগুলির ক্ষতি করতে পারে।
- উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির রক্তনালীগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে, যা তাদের ক্ষতি করতে পারে।
- কিডনিতে সংক্রমণ: কিডনিতে সংক্রমণ হলে কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে।
- কিডনিতে পাথর: কিডনিতে পাথর হলে মূত্রনালী বন্ধ হয়ে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধ কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
- কিডনির জন্মগত ত্রুটি: কিছু মানুষের জন্মগতভাবে কিডনির ত্রুটি থাকে।
কিডনির সমস্যা হলে ক্লান্তি, দুর্বলতা, প্রস্রাবের পরিবর্তন, পা ফোলা, শ্বাসকষ্ট এবং বমি বমি ভাবের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সচেতনতা এবং সঠিক যত্ন কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই, কিডনির যত্ন নিন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।