বাংলার ‘মৌজা ম্যাপ’ নতুন করে তৈরি: একশো বছর পর বড় উদ্যোগ
বাংলায় শতাব্দীর পুরনো মৌজা ম্যাপকে নতুন করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে গোটা রাজ্যের ভূমি ব্যবহারের মানচিত্রই বদলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রায় একশো বছর পর এই প্রথম রাজ্যজুড়ে এত ব্যাপক পরিসরে মৌজা ম্যাপের সংস্কার করা হচ্ছে।
কেন এই উদ্যোগ?
- জমির চরিত্রের পরিবর্তন: শিল্পায়ন, শহুরীকরণ এবং নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণের ফলে গত কয়েক দশকে বাংলার ভূমি ব্যবহারে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। পুরনো মৌজা ম্যাপ আর এই পরিবর্তনকে সঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারছে না।
- উন্নয়ন পরিকল্পনায় সহায়তা: নতুন মৌজা ম্যাপের সাহায্যে রাজ্য সরকার আরও ভালোভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারবে। কোন এলাকায় কৃষি জমি বেশি, কোন এলাকায় আবাসিক এলাকা বেশি, কোথায় শিল্প কেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে— এই সব তথ্য নতুন ম্যাপে থাকবে।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা: মশার বংশবৃদ্ধি, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণগুলি খুঁজে বের করতে এই ম্যাপ সাহায্য করবে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারকে সহায়তা করা যাবে।
কীভাবে এই ম্যাপ তৈরি করা হবে?
- উচ্চ রেজোলিউশন উপগ্রহ চিত্র: প্রতিটি মৌজার উচ্চ রেজোলিউশন উপগ্রহ চিত্র তৈরি করা হবে।
- ড্রোন ক্যামেরা: ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে জমির বিস্তারিত ছবি তোলা হবে।
- সরাসরি জরিপ: প্রতিটি মৌজায় সরাসরি জরিপ করে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
তিন ধাপে সম্পন্ন হবে এই কাজ:
- প্রথম ধাপ: হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমান জেলা।
- দ্বিতীয় ধাপ: দুই ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং নদিয়া জেলা।
- তৃতীয় ধাপ: কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, কালিম্পং এবং দার্জিলিং জেলা।
এই উদ্যোগের ফলে কী কী পরিবর্তন আসবে?
- জমির মূল্য নির্ধারণ: জমির সঠিক মূল্য নির্ধারণ সহজ হবে।
- ভূমি সংক্রান্ত বিবাদ কমবে: জমির সীমানা নির্ধারণে স্পষ্টতা আসবে।
- উন্নয়ন পরিকল্পনায় স্বচ্ছতা: উন্নয়ন পরিকল্পনা আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ হবে।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা: প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমানো যাবে।