বৃষ্টিতেও থামেনি আন্দোলন, জনসমর্থনে ফেটে পড়ল ধর্না মঞ্চ
শুক্রবার দিনভর বৃষ্টির মধ্যেও চিকিৎসকদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ মানুষের সমর্থনে ফেটে পড়েছে ধর্না মঞ্চ। খাবার, পানীয়, ওষুধ সহ সব ধরনের সাহায্য পাঠাচ্ছেন মানুষ। চিকিৎসকরাও জনগণের এই সমর্থনে উৎসাহিত।
শুক্রবার বেলা ১২টা থেকে কখনও মুষলধারে, কখনও বা টিপটিপ করে বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেই বৃষ্টি আন্দোলনকে দমাতে পারেনি। বরং সেখানে উপস্থিত জুনিয়র চিকিৎসকেরা দাবি করেছেন, আন্দোলন দিন দিন আরও বেশি করে সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে। আরও বেশি মানুষ সমর্থনের হাত বাড়িয়েছেন।
দুপুর গড়াতেই দেখা গেল, আন্দোলন দেখতে ভিড় জমিয়েছেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। অফিসের কাজ সেরে কলেজ মোড় থেকে আন্দোলন দেখতে একাই এসেছিলেন স্বাতীলেখা রায়। তিনি বললেন, ‘‘এত দিন খবরের কাগজে, টিভিতে দেখেছি এই আন্দোলন। আজ চাক্ষুষ করতে চলে এলাম। চিকিৎসকদের এই আন্দোলনে আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’’
এক দিকে খুলেছে খাবারের কাউন্টার। নাম দেওয়া হয়েছে ‘জনগণের ভালবাসা।’ সেখানে সাধারণ মানুষের দিয়ে যাওয়া খাবার উপচে পড়ছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এক পড়ুয়া-চিকিৎসক বললেন, ‘‘শুক্রবারই সব থেকে বেশি খাবার এসেছে। চিন্তা হচ্ছে, নষ্ট না হয়ে যায়। তাই আমরা বলছি, কেউ খাবার নিয়ে এলে আমাদের যেন জানিয়ে আসেন। কোন সময়ে খাবার আনতে হবে, সেটা বলে দেব।’’
পাঠভবন স্কুলের প্রাক্তনীরা মিলে খুলেছেন খাবারের স্টল। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ভাত, ডাল, আলু-পোস্ত, ডিমের ঝোল। সেই স্টলে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঐশী পাল। পাশে তাঁর মা মিঠু পাল। তাঁরা এসেছেন ভোজেরহাট থেকে। ঐশী বললেন, ‘‘আমরা পাঠভবনের প্রাক্তনীরা মিলে চাঁদা তুলে এই খাবারের স্টল করেছি। সকালে উঠে আমরা বাজার করে দিয়েছি। মা রান্না করেছেন। ৩০০ জনের মতো রান্না করা হয়েছে।’’
এ দিকে, ধর্না মঞ্চে চালু হয়েছে ‘অভয়া ক্লিনিক’। চিকিৎসকেরা জানালেন, মানুষ যত ক্ষণ আসবেন, তত ক্ষণ এই ক্লিনিক খোলা থাকবে। কার্ডিয়োলজি থেকে শুরু করে নিউরোসার্জারি, প্রায় সব বিভাগের চিকিৎসকেরাই রয়েছেন। রোগীদের দেখে প্রেসক্রিপশন দেওয়া হচ্ছে।
রাতে দেখা গেল, নতুন কিছু ত্রিপল লাগানো হয়েছে। স্লোগানের ঝাঁঝ আরও তীব্র হয়েছে। সেই স্লোগানে, হাততালিতে যোগ দিচ্ছেন বহু সাধারণ মানুষ। চিকিৎসক সৌরভ রায় বলেন, ‘‘এত মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। নির্যাতিতা বিচার পাবেনই। সব প্রশ্নের জবাবও এক দিন পাবই।’’